ভুট্টা চাষের সময়-vutta chaser somoy
ভুট্টা চাষের সঠিক সময়: এক নজরে জেনে নিন!
আপনি ভুট্টা চাষের সঠিক সময় জানতে চাচ্ছেন, এটা খুবই ভালো একটা প্রশ্ন! ভুট্টা চাষের জন্য সঠিক সময় নির্বাচন করা ফসলের ভালো ফলনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ভুট্টা চাষের উপযুক্ত সময়:
বাংলাদেশে সাধারণত তিনটি মৌসুমে ভুট্টা চাষ করা হয়:
- রবি মৌসুম: নভেম্বর – ডিসেম্বর
- গ্রীষ্ম মৌসুম: মার্চ – এপ্রিল (খরিফ-১)
- বর্ষা মৌসুম: জুলাই-আগস্ট (খরিফ-২)
কেন এই সময়গুলোই উপযুক্ত?
মাটির আর্দ্রতা: এই সময়গুলোতে মাটির আর্দ্রতা ভুট্টার বীজ বপন এবং বৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত থাকে।
তাপমাত্রা: ভুট্টা গরম আবহাওয়াকে পছন্দ করে। এই সময়গুলোতে আবহাওয়া গরম থাকে, যা ভুট্টার বৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত।
বৃষ্টিপাত: ভুট্টাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন। এই সময়গুলোতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ভুট্টা চাষের জন্য উপযুক্ত থাকে।
বিশেষজ্ঞের মতামত:
এই তথ্যটি দিয়েছেন ড. মোহাম্মদ আলী খান, সিনিয়র কৃষি কর্মকর্তা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
তাঁর মতে, “ভুট্টা চাষের জন্য উঁচু ও মাঝারি উঁচু জমি বেছে নেওয়া উচিত। সঠিক সময়ে বীজ বপন করলে ফলন বৃদ্ধি পায়।”
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি বিজ্ঞানী ড. মোহাম্মদ আলী মিঞা বলেন, “ভুট্টা চাষের জন্য সঠিক সময় নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উপযুক্ত সময়ে বীজ বপন করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়।”
দিনাজপুর জেলার কৃষকদের রবি মৌসুমে গমের পাশাপাশি ভুট্টা চাষে উৎসাহিত করা হচ্ছে। গমের চেয়ে বেশি উৎপাদন করে ভুট্টা থেকে কৃষকরা দ্বিগুণ আয় করতে পারবেন বলে মনে করেন কৃষি বিজ্ঞানীরা।
বাংলাদেশে ভুট্টার চাষ হয়। যেখানে কৃষকরা খরিফ মৌসুমে ব্যাপক হারে ভুট্টা চাষ করেন। কিন্তু, এখন কৃষি বিজ্ঞানীরা রবি মৌসুমেও ভুট্টা চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করছেন, যা লাভের নিশ্চয়তা বলে বলা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে, ভুট্টার চাহিদা অনেক বেশি, ভুট্টার আটা, কর্নফ্লেক্স, পপকর্ন, বেবিকর্ন এবং মিষ্টিকর্নের মতো জিনিসগুলি আজ প্রতি দ্বিতীয় ঘরে ব্যবহৃত হচ্ছে। অন্যদিকে, পোল্ট্রি ফার্মিং এবং ইথানল উৎপাদন সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভুট্টার ব্যবহারের কারণে শুধু বাংলাদেশেই নয় , বিশ্বে ভুট্টার জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ছে। কৃষিবিদদের মতে, খরিফ ও রবি মৌসুমে ভুট্টা চাষ করলে ধান ও গমের তুলনায় কৃষকরা ভালো লাভ করতে পারে।
প্রায় বছর জুড়ে (খারিফ, রবি, গ্রীষ্মকালীন) ফসল হিসাবে ভুট্টা চাষ করা যায়। তবে, ভালো ফলন পেতে নির্ধারিত সময়ে মধ্যে যতটা সম্ভব আগাম বীজ বপন করা উত্তম । আমাদের দেশে রবি মৌসুম (অক্টোবর থেকে নভেম্বর) এবং খরিপ মৌসুম (মধ্য ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ) পর্যন্ত ভুট্টার বীজ বপনের উপযুক্ত সময়।
এবার আসেন ভুট্টার চাষ পদ্ধতি সম্বন্ধে জানি-
এক নজরে এই পোষ্টে কি কি থাকছে দেখে নিনঃ
- 1 ১-হাইব্রিড ভুট্টা চাষ পদ্ধতি
- 2 ২-হাইব্রিড ভুট্টা চাষের জন্য জলবায়ু
- 3 ৩-হাইব্রিড ভুট্টার জাত
- 4 ৪-হাইব্রিড ভুট্টা বীজ বপন পদ্ধতি
- 5 ৫-হাইব্রিড ভুট্টা চাষে সেচ
- 6 ৬-হাইব্রিড ভুট্টা চাষে সার
- 7 ৭-হাইব্রিড ভুট্টা চাষে রোগ
- 8 ভুট্টা চাষ পদ্ধতি ও ফলন
- 9 ভুট্টা চাষে খরচ ও লাভ
- 10 ভুট্টা কোন মাটিতে ভালো হয়
- 11 বিঘা প্রতি ভুট্টার ফলন
- 12 ভুট্টার জাত সমূহ
- 13 পাইওনিয়ার ভুট্টা ৩৩৫৫
- 14 উন্নত জাতের ভুট্টার নাম
- 15 ভুট্টা কত দিনের ফসল।ভুট্টার জীবনকাল
- 16 লোকেরা যে সমস্ত প্রশ্ন প্রায়ই জিজ্ঞেস করে
১-হাইব্রিড ভুট্টা চাষ পদ্ধতি
হাইব্রিড ভুট্টা চাষ | সারা বিশ্বে খাদ্য শস্যের মধ্যে ভুট্টার একটি বিশিষ্ট স্থান রয়েছে। আমাদের বাংলাদেশে ধান ও গমের পর ভুট্টা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফসল। হাইব্রিড ভুট্টা প্রধানত খরিফ ফসল হিসেবে বিবেচিত হলেও অনেক এলাকায় রবি মৌসুমেও চাষ করা হয়। আপনি যদি সচেতন কৃষক হন এবং চাষে ভালো লাভ চান তাহলে আপনার ভুট্টা চাষ করা উচিত। ভুট্টার ফলন ভালো লাভ দেয়। হাইব্রিড ভুট্টা চাষ সম্পর্কিত সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানতে, এই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
আপনি যদি একজন কৃষক হন তবে এই নিবন্ধটি আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে কারণ এই নিবন্ধে আমরা আপনাকে ভুট্টা চাষ সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য দেব। যেমন ভুট্টা চাষ করবেন কিভাবে? ভুট্টা চাষে লাভ? ভুট্টা চাষের জন্য জলবায়ু? ভুট্টার উন্নত জাত? ভুট্টা চাষের সময়? আপনি ভুট্টা চাষের মত বিষয়গুলি সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য পাবেন এই নিবন্ধে৷
হাইব্রিড ভুট্টা চাষ পদ্ধতি (সংক্ষিপ্ত)
ধাপ | বিবরণ |
---|---|
জমি নির্বাচন ও প্রস্তুতি: | পানি জমে না এমন বেলে দো-আঁশ বা দো-আঁশ মাটি ভুট্টা চাষের জন্য ভালো। * জমি ভালো করে যুগান্তর করে নরম করে তৈরি করতে হবে। * জৈব সার ব্যবহার করে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করতে হবে। |
বীজ বপন: | উন্নত জাতের বীজ ব্যবহার করা উচিত। * বীজ বপনের উপযুক্ত সময় বর্ষাকালের শুরু (জুন-জুলাই)। * লাইনে লাইন 60-70 সেমি এবং গাছ থেকে গাছে 20-25 সেমি দূরত্বে বীজ বপন করতে হবে। |
সার প্রয়োগ: | ভুট্টা সার প্রিয় ফসল। * সার প্রয়োগের পরিমাণ জমির উর্বরতার উপর নির্ভর করে। * সার হিসেবে জৈব সার, ইউরিয়া, টিএসপি এবং এমওপি ব্যবহার করা যেতে পারে। |
সেচ ব্যবস্থাপনা: | বীজ বপনের পর নিয়মিত সেচ দিতে হবে। * গাছ বড় হলে সেচের পরিমাণ কমিয়ে দিতে হবে। * পানি জমে না যেন সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। |
আগাছা দমন: | নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। * আগাছা দমনের জন্য আগাছানাশক ব্যবহার করা যেতে পারে। |
রোগ ও পোকামাকড়: | ভুট্টা গাছে বিভিন্ন রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ হতে পারে। * রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ দেখা গেলে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। |
ফসল সংগ্রহ: | ফসল পাকলে ঠোঁট শুকিয়ে গেলে ও পাতা হলুদ হয়ে গেলে কাটতে হবে। * ফসল কাটার পর শুকিয়ে রোদে ভালো করে শুকিয়ে গুঁড়ো করে বা বীজ হিসেবে সংরক্ষণ করা যেতে পারে। |
২-হাইব্রিড ভুট্টা চাষের জন্য জলবায়ু
আমরা আপনাকে বলি যে হাইব্রিড ভুট্টা উষ্ণ এবং আর্দ্র জলবায়ুর একটি ফসল। এর চাষের জন্য, এমন জমি সর্বোত্তম যেখানে ভাল নিষ্কাশন ব্যবস্থা রয়েছে। একই সময়ে, বীজ বপনের সময় 20 থেকে 25 ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা এবং বৃদ্ধি এবং বিকাশের সময় 30 ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা সর্বোত্তম বলে মনে করা হয়।
৩-হাইব্রিড ভুট্টার জাত
জাতের নাম | জীবন কাল | উৎপাদন |
---|---|---|
সিনজেনটা NH7720 | ১২০-১৬৫ | বিঘা প্রতি প্রায় ৬০ মন |
কাবেরি ৫৪ | ১১০-১৩০ | বিঘা প্রতি প্রায় ৬২ মন |
৯৮৪ গোল্ড | ১২০-১৪০ | বিঘা প্রতি প্রায় ৬৫ মন |
পাইওনিয়ার ৩৩৫৫ | ১২০-১৬০ | বিঘা প্রতি প্রায় ৬১ মন |
ডালিয়া ৪৪৫৫ | ১২০-১৬০ | বিঘা প্রতি প্রায় ৫৫ মন |
৯২১৭ | ১২০-১৩০ | বিঘা প্রতি প্রায় ৫৪ মন |
বাজিমাত | ১২০-১৪০ | বিঘা প্রতি প্রায় ৫১ মন |
ডন ১১ | ১২০-১৬০ | বিঘা প্রতি প্রায় ৫৭ মন |
৯১৮৮ | ১২০-১৫৬ | বিঘা প্রতি প্রায় ৫০ মন |
৩৫B৫৫ | ১২০-১৫৬ | বিঘা প্রতি প্রায় ৫২ মন |
খৈ ভুট্টা | রবি মৌসুমে ১২৫-১৩০ দিনে এবং খরিফ মৌসুমে ৮০-৯০ দিনে পাকে। | ফলন প্রতি হেক্টরে রবি মৌসুমে ৩.৫-৪.০ টন এবং খরিফ মৌসুমে ২.৫-৩.৫ টন। কেজি |
বর্ণালী | জাতটি রবি মৌসুমে ১৪০-১৪৫ দিনে এবং খরিফ মৌসুমে ৯৫-১০০ দিনে পাকে। | ফলন প্রতি হেক্টরে রবি মৌসুমে ৫.৫-৬.০ টন এবং খরিপ মৌসুমে ৪.০-৪.৫ টন হয়। কেজি |
মোহর | জাতটি রবি মৌসুমে ১৩৫-১৪৫ দিনে এবং খরিফ মৌসুমে ৯৫-১০৫দিনে পাকে। | ফলন হেক্টরে রবি মৌসুমে ৫.০-৫.৫ টন এবং খরিফ মৌসুমে ৩.৫-৪.৫ টন হয়। কেজি |
শুভ্রা | জাতটি রবি মৌসুমে ১৩৫-১৪৫ দিনে এবং খরিফ মৌসুমে ৯৫-১১০ দিনে পাকে। | ফলন প্রতি হেক্টরে রবি মৌসুমে ৪.৫-৫.৫ টন এবং খরিফ মৌসুমে ৩.৫-৪.৫ টন। কেজি |
বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১ | জীবনকাল রবি মৌসুমে ১৪০-১৫০ দিন ও খরিফ মৌসুমে ১০০-১১০ দিন । | জাতটির ফলন হেক্টরে রবি মৌসুমে ৭.৫-৯.৫ টন এর খরিপ মৌসুমে ৬.৫-৮.০ টন। কেজি |
বারি হাইব্রিড ভুট্টা-২ | রবি মৌসুমে ১৪৫-১৫০ দিন ও খরিফ মৌসুমে ১০০-১০৫ দিন । | রবি মৌসুমে ফলন গড়পড়তা ৮-৯ টন/হেক্টর। খরিপ মৌসুমে ৭-৭.৫ টন/হেক্টর। কেজি |
বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৩ | জীবনকাল রবি মৌসুমে ১৪৬-১৫০ দিন। খরিপ মৌসুমে ১১০-১২০ দিন গড়পরতা ফলন। | রবি মৌসুমে গড় ফলন ৯.৫-১০.০ টন/হেঃ এবং খরিপ মৌসুমে ৭-৭.৫ টন/হেঃ। কেজি |
বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৪ | বি মৌসুমে এ জাতের জীবনকাল ১৩৫-১৪৫ দিন এবং খরিপে ১১৫ দিন। | জাতটির ফলন রবি মৌসুমে গড়ে ৭.৪-৯.৫ টন/হেঃ। কেজি |
বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৫ | জীবনকাল রবি মৌসুমে ১৪০-১৪৫ দিন ও খরিফ মৌসুমে ৯৫-১০৫ দিন। | জাতটির ফলন হেক্টরে রবি মৌসুমে ১০.০-১০.৫ টন ও খরিফ মৌসুমে ৭.০-৭.৫ টন। কেজি |
বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৬ | জীবনকাল রবি মৌসুমে ১৪৪-১৪৮দিন খরিপ মৌসুমে ৯০-১১০ দিন। | জাতটির ফলন হেক্টরে রবি মৌসুমে ৯.৮-১০.০ টন/হে. ও খরিপে ৮.০-৮.৫ টন/হে.। কেজি |
বিদেশি জাতগুলোর মধ্যে অঞ্চলভেদে কোনো কোনো জাতের বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে। এসব জাতের মধ্যে রয়েছে এনকে-৪০, এনকে-৪৬, এনকে-৪৮, এনকে-৬০, প্যাসেফিক-১১, প্যাসেফিক-৬০, ৯০০ এম, কনক, ৭১৭, বারি ভুট্টা-৫। আরো কিছু ভালো ভালো হাইব্রিড ভুট্টা জাত রয়েছে বাজারে। নতুন নতুন জাতও আসছে দিন দিন। আপনার আশেপাশে দেখুন কোন ভুট্টাগুলো গুলো ভালো ফলন দিচ্ছে সেগুলো চাষ করুন।
৪-হাইব্রিড ভুট্টা বীজ বপন পদ্ধতি
- সারিতে বুনলে লাইন থেকে লাইনের দুরত্ব হবে ৭০ সেন্টিমিটার (২৮ ইঞ্চি), বীজ থেকে বীজের দুরত্ব হতে হবে ২৫ সেন্টিমিটার (১০ ইঞ্চি), বীজ বপনের গভীরতা হবে ৩-৪ সেন্টিমিটার
- ছিটিয়ে বপনের সময় এমন ভাবে বীজ ছিটিয়ে দিতে হবে; একক এলাকায় পর্যাপ্ত পরিমান গাছ যাতে থাকে।
৫-হাইব্রিড ভুট্টা চাষে সেচ
হাইব্রিড ভুট্টা চাষে সেচ ব্যবস্থাপনা:
কতবার সেচ দিতে হবে:
হাইব্রিড ভুট্টা চাষে মোট 7-8 বার সেচ দিতে হবে। তবে, সেচের সংখ্যা নির্ভর করে:
- জমির ধরন: বেলে জমিতে বেশি, দো-আঁশ জমিতে কম সেচ দিতে হবে।
- আবহাওয়া: খরা অঞ্চলে বেশি, আর্দ্র অঞ্চলে কম সেচ দিতে হবে।
- জাতের ধরণ: দীর্ঘমেয়াদী জাতের তুলনায় অल्पমেয়াদী জাতে কম সেচ দিতে হবে।
আসুন আমরা আপনাকে বলি যে ভুট্টা চাষে আর্দ্রতা বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য সময়ে সময়ে সেচ দিতে হবে। বীজ বপনের পরপরই আপনাকে প্রথম সেচ দিতে হবে। এরপর ১০ থেকে ১৫ দিনের ব্যবধানে হালকা সেচ দিতে হয়। যখন গাছে দানা ভরাট শুরু হয় তখন বেশি পানির প্রয়োজন হয়। বীজ রোপণের সময় অনুযায়ী ভুট্টা ফসলে সেচ দেওয়া হয়।
৬-হাইব্রিড ভুট্টা চাষে সার
আসুন আমরা আপনাকে বলি যে ভুট্টা চাষে , প্রাথমিক পরিপক্ক জাতগুলির জন্য 160 থেকে 180 কেজি নাইট্রোজেন, 150 থেকে 160 কেজি ফসফরাস এবং 140 থেকে 145 কেজি পটাশ প্রতি হেক্টর প্রয়োজন হয়। মাঝারি ও দেরিতে পরিপক্ক জাতের জন্য 150 থেকে 190 কেজি নাইট্রোজেন প্রয়োজন।
৭-হাইব্রিড ভুট্টা চাষে রোগ
আসুন আমরা আপনাকে বলি যে ভুট্টা চাষে বিভিন্ন ধরণের রোগ হতে পারে, কিছু প্রধান রোগ সম্পর্কে তথ্য নীচে দেওয়া হল:
- কান্ড পচা
- পাতার ঝাপসা
- ডাউনি মিলডিউ
- কান্ড ভেদকারী প্রং রোগ
- ভুট্টার কাটুই পোকা
- ভুট্টার লেদা পোকা
- ভুট্টার ফ্লি বিটল পোকা
- ভুট্টার ঘাসফড়িং
- ভুট্টার উড়চুঙ্গা পোকা
- ভুট্টার জাবপোকা বা এফিড
ভুট্টা চাষ পদ্ধতি ও ফলন
আসুন আমরা আপনাকে বলি যে আপনি সহজেই ভুট্টা চাষ করে প্রচুর মুনাফা অর্জন করতে পারেন। ভুট্টা চাষ করতে, নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করুন:
- ভুট্টা চাষ করতে হলে প্রথমেই সঠিকভাবে জমি প্রস্তুত করতে হবে।
- এর জন্য একবার গভীর চাষ করতে হবে।
- এর পরে, আপনাকে প্রয়োজন অনুসারে পচা জৈবসার যোগ করতে হবে।
- এখন কিছু সময়ের জন্য মাঠ ফাঁকা রাখতে হবে। যেন জৈব সার মাটিতে মজে যেতে পারে।
- বীজ বপনের 15 দিন আগে আবার গভীর চাষ করুন।
- এরপর মাঠ সমতল করতে হবে যাতে জলাবদ্ধতা না থাকে।
- সঠিকভাবে বীজ নির্বাচন করুন যাতে আপনি ভাল ফলন পেতে পারেন। মনে রাখবেন যে আপনাকে শুধুমাত্র প্রত্যয়িত বীজ নির্বাচন করতে হবে।
- উপরের আবহাওয়ার সময় অনুযায়ী বপন করতে হবে।
- মনে রাখবেন বীজ ড্রিলের সাহায্যে বীজ বপন করতে হবে।
- 2.5 থেকে 3.5 সেন্টিমিটার গভীরতায় বীজ বপন করার জন্য আপনাকে বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে।
- এখন 8 থেকে 10 দিনের মধ্যে ভুট্টার বীজ সম্পূর্ণরূপে অঙ্কুরিত হবে এবং গাছগুলি বের হতে শুরু করবে।
ভুট্টা চাষে খরচ ও লাভ
আপনি যদি 1 হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ করেন তবে আপনি 7 থেকে 8 টন ফলন পেতে পারেন। ঠিক আছে, ফলনও বিভিন্নতার উপর নির্ভর করে। আমরা আপনাকে বলি যে ভুট্টার বাজার মূল্য প্রতি কেজি 30 থেকে 40 টাকা পর্যন্ত রয়েছে। এই অনুসারে কৃষকরা 1 হেক্টর খামার থেকে সহজেই প্রায় 2 লক্ষ থেকে 3 লক্ষ টাকা আয় করতে পারে। যেখানে খরচের কথা বললে, এর চাষে প্রতি হেক্টরে প্রায় 70 থেকে 90 হাজার টাকা খরচ হয়।
ভুট্টা চাষে খরচ ও লাভ: বিস্তারিত বিশ্লেষণ
ভুট্টা বাংলাদেশের কৃষি অর্থনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ফসল। খাদ্য ও পশুখাদ্য উভয় ক্ষেত্রেই এর চাহিদা ব্যাপক।
ভুট্টা চাষে লাভবান হতে হলে, খরচ ও আয় সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা জরুরি।
এই বিভাগে, আমরা প্রতি বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষের খরচ ও আয়ের একটি বিস্তারিত বিশ্লেষণ প্রদান করবো।
খরচ:
- বীজ: 3 কেজি (মূল্য: 1,500 টাকা)
- সার:
- ইউরিয়া: 100 কেজি (মূল্য: 3,000 টাকা)
- টিএসপি: 60 কেজি (মূল্য: 2,400 টাকা)
- এমওপি: 40 কেজি (মূল্য: 1,000 টাকা)
- এর পরের ডোজ সার আবার-3000
- কীটনাশক ধরলাম : (মূল্য: 2,000 টাকা) দিতে হলো
- সেচ: 8 বার (মূল্য: 4,000 টাকা) যদি না দেওয়া লাগে অথবা কম দেওয়া লাগে তাহলে টাকা বাঁচবে
- শ্রম: 10 জন-দিন (মূল্য: 5,000 টাকা) নিজে করলে টাকা লাগবে না
- যানবাহন জমি থেকে বাড়ি যদি দূরে হয়: 5 ট্রিপ (মূল্য: 2,500 টাকা)
- অন্যান্য: (জমি ভাড়া, বীমা, ইত্যাদি) (মূল্য: 4,000 টাকা)
মোট খরচ: 28,000 টাকা
আয়:
- উৎপাদন: 50 মণ (ধারণা করা হচ্ছে)
- বাজার মূল্য (প্রতি মণ): 800 টাকা (বাজারের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে)
- মোট আয়: 40,000 টাকা
মুনাফা/ক্ষতি: -12,000 টাকা (লাভ) এর থেকে লাভ বেশি হয় আমি নিজে আবাদ করে দেখেছি-৩০০০০ টাকা পর্যন্ত লাভ হয় বিঘা পতি।
ভুট্টা চাষে লাভের কথা যদি আমরা ধরি তাহলে একটা বিষয় চলে আসে সেটা হল ভুট্টার দাম,কোন কোন সময় রবি মৌসুমে ভুট্টার দাম বেশি থাকে, আবার কোন কোন সময় ফরিদ মৌসুমী খরি, মৌসুমে ভুট্টার দাম বেশি থাকে।
ভুট্টা কোন মাটিতে ভালো হয়
ভুট্টা চাষ সাধারণত যে কোন জমিতে করা যায়, তবে ভালো মানের এবং উচ্চ ফলনের জন্য বেলে দোআঁশ মাটির প্রয়োজন হয়। এছাড়াও, জমি ভালভাবে নিষ্কাশন করা উচিত।
বিঘা প্রতি ভুট্টার ফলন
প্রতি বিঘা জমিতে ৩৬-৪৬ মণ ভুট্টা উৎপন্ন হয়।
ভুট্টার জাত সমূহ
খৈ ভুট্টা,বর্ণালী,মোহর,বারি হাইব্রিড ভুট্টা-1,বারি হাইব্রিড ভুট্টা-2,বারি হাইব্রিড ভুট্টা-3,বারি হাইব্রিড ভুট্টা-4,বারি হাইব্রিড ভুট্টা-5,বারি হাইব্রিড ভুট্টা-6
পাইওনিয়ার ভুট্টা ৩৩৫৫
পাইনিয়র ৩৩৫৫ জাতের ভুট্টা কেনো চাষ করবেন? এবং কোথায় বীজ পাবেন বিস্তারিত জেনে নিন।যে কোন জাতের ভুট্টার বীজের জন্যে যোগাযোগ করুনঃ 01820409736
পাইওনিয়ার ৩৩৫৫ হাইব্রিড ভুট্টা
- উচ্চ ফলনশীল সিঙ্গেল ক্রস হাইব্রিড জাত।
- বিঘা প্রতি ফলন ৬০ থেকে ৭০ মন।
- শীত ও গ্রীষ্ম উভয় মৌসুমে চাষ করা যায়।
- জাতটির জীবনকাল রবি মৌসুমে ১৪০-১৪৫ দিন ও খরিপ মৌসুমে ৯৫-১০৫ দিন।
- ফ্লিন্ট ও আকর্ষণীয় কমলা রঙের দানা।
- হাজার দানার ওজন ২৯৫-৩১৫ গ্রাম।
- খরা সহিষ্ণু ও সহজে ঝড় বৃষ্টিতে ঝড়ে পড়ে না।
পাইওনিয়ার ৩৩৫৫ হাইব্রিড ভুট্টা এর ২ কেজির প্যাকেট হয়ে থাকে। বাংলাদেশি টাকায় যার বাজার মূল্য ১৯০০ টাকা। যে প্যাকেটটি থিরাম ৪০% এফ এস এবং ডেল্টা মেথ্রিন 2.5% ডব্লিউ পি দ্বারা শোধন করা হয়েছে। এই প্রোডাক্টটি ভারতের হায়দ্রাবাদের। যে কোম্পানিটি বাজারজাত করছে তার নাম হলো-CORTEVA AGRISCIENCE SEEDS PRIVATE LIMITED.
উন্নত জাতের ভুট্টার নাম
বিডাব্লিউএমআরআই হাইব্রিড ভুট্টা ১, বিডাব্লিউএমআরআই হাইব্রিড ভুট্টা ২,বারি হাইব্রিড ভুট্টা ১৪,বিডাব্লিউএমআরআই হাইব্রিড ভুট্টা ১,বারি হাইব্রিড ভুট্টা ১৪, বারি হাইব্রিড ভুট্টা ১৫, বারি হাইব্রিড ভুট্টা ১৭,বারি হাইব্রিড ভুট্টা ১৬,বারি হাইব্রিড ভুট্টা ১২, বারি হাইব্রিড ভুট্টা ১৩,বারি ভুট্টা ৭, বারি হাইব্রিড ভুট্টা ১৩, বারি হাইব্রিড ভুট্টা ১৭, বিডাব্লিউএমআরআই হাইব্রিড বেবি কর্ণ ১,বারি হাইব্রিড ভুট্টা ৫
ভুট্টা কত দিনের ফসল।ভুট্টার জীবনকাল
রবি মৌসুমে যে সমস্ত জাত বপন করা হয় এ সমস্ত জাতের জীবনকাল ১৪৫-১৫০ দিন এবং খরিফ মৌসুমে ৯৫-১০৫ দিন।
লোকেরা যে সমস্ত প্রশ্ন প্রায়ই জিজ্ঞেস করে
ভুট্টা চাষ করতে কত দিন সময় লাগে?
রবি মৌসুমে যে সমস্ত জাত বপন করা হয় এ সমস্ত জাতের জীবনকাল ১৪৫-১৫০ দিন এবং খরিফ মৌসুমে ৯৫-১০৫ দিন।
১ বিঘায় কত মন ভুট্টা হয়?
প্রতি বিঘা জমিতে ৩৬-৪৬ মণ ভুট্টা উৎপন্ন হয়।
কোন মাটিতে ভুট্টা চাষ ভালো হয়
ভুট্টার জন্য আদর্শ মাটি ভাল নিষ্কাশন এবং উর্বর, যার pH 6.0-6.8 । একটি সাধারণ নিয়ম হিসাবে, হালকা মাটিতে (বালি বা দোআঁশ) এবং পরবর্তীতে ভুট্টা ভারী মাটিতে (পলি বা কাদামাটি) রোপণ করুন, যখন বিকল্প থাকে। হালকা মাটি ভারী মাটির চেয়ে দ্রুত গরম হয়, তাই বীজ আরও সহজে অঙ্কুরিত হয়।
ভুট্টা দ্রুত বৃদ্ধির উপায়
১। সঠিকভাবে জমি চাষ করে নিতে হবে
২। সঠিকভাবে সার ও শেষ প্রদান করতে হবে
৩। ভালো জাত নির্বাচন করতে হবে
৪। কপানি অথবা নিরানী দিয়ে আগাছা পরিষ্কার করে দিতে হবে
৫। প্রচুর জৈব সার প্রয়োগ করতে হবে
৬। জিংক , বরুণ ,ম্যাগনেসিয়াম, সালফার ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হবে
ভুট্টার বাদামী কান্ড পচা রোগের চিকিৎসা
সমন্বিত দমন ব্যবস্থাপনাঃ
বীজ বপনের পূর্বে বীজ শোধন করা যথা ৩ গ্রাম প্রোভেক্স বা ভিটাটেক্স বা ২ গ্রাম ব্যাভিষ্টিন/ কেজি বীজ।
সুষম সার ব্যবহার করা।
ভুট্রা কাটার পর পরিত্যক্ত অংশ পুড়িয়ে ফেলা।
আক্রমণ বেশি হলে অনুমোদিত ছত্রাকনাশক ব্যবহার করা যথা প্রোপিকোনাজল (টিল্ট ২৫০ ইসি) ১ মিঃ লিঃ প্রতি লিটার পানিতে।
ভুট্টার কান্ড পচা রোগের লক্ষণ কি কি
লক্ষণঃ
গাছের কান্ড পচে যায় এবং গাছ মাটিতে ভেঙ্গে পড়ে।
আমাদের দেশে খরিপ মৌসুমে এ রোগ বেশী হয়।
জমিতে নাইট্রোজেন সার বেশী ও পটাশ সার কম দিলে এ রোগ বেশী হয়।
ভুট্টার গোড়া পচে যাওয়ার কারণ
ঘন ঘন বৃষ্টিপাত ও পত্রপল্লবে জলসেচের কারণে পাতার গোড়ায় জল জমে। এই জল গরম হয়ে উদ্ভিদের কোষকলা নষ্ট করে ফেলে যার মাধ্যমে সংক্রমণ ঘটে। উচ্চ তাপমাত্রা বা বন্যার কারণে গাছের গোড়ায় লক্ষণ প্রকাশিত হয়। সেচের জল সংক্রমণের প্রাথমিক উৎস বলে মানা হয়।
Banglapoints.com এ আপনাদের স্বাগতম।ব্লগিংয়ে আমার দীর্ঘ দিনের অভিজ্ঞতা। আমার এই দীর্ঘ ব্লগিং ক্যারিয়ারে আমার বানানো অনেকগুলো ওয়েবসাইট এর মধ্যে এটি একটি।আমার বিশ্বাস যে ক্যাটাগরিগুলো আমার ওয়েবসাইট এ আছে এগুলো একজন ভিসিটরকে 100% আসল এবং নিরাপদ কনটেন্ট প্রদান করবে যাতে যা কেউ প্রপার নলেজ ,ইনস্পিরেশন ও গাইডেন্স পায়।
খুব ভালো লাগলো পোস্টি পড়ে